নামকরণ
২১ নম্বর আয়াতের (আরবী) বাক্যাংশ থেকে নাম গৃহীত হয়েছে ।
নাযিলের হওয়ার সময়-কাল
এ সূরা নাযিল হওয়ার সময়-কাল ২৯ থেকে ৩২ আয়াতে বর্ণিত একটি ঐতিহাসিক ঘটনা থেকে নিরূপিত হয়ে যায় । এ আয়াতগুলোতে রসূলুল্লাহর (সা) কাছে এসে জিনদের ইসলাম গ্রহণ করে ফিরে যাওয়ার ঘটনা বর্ণিত হয়েছে । হাদীস ও সীরাত গ্রন্থসমূহে ঐকমত্যের ভিত্তিতে বর্ণিত রেওয়ায়েতসমূহ অনুসারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে সময় তায়েফ থেকে মক্কায় ফিরে আসার পথে নাখলা নামক স্থানে যাত্রা বিরতি করেছিলেন সেই সময় ঘটনাটি ঘটেছিলো । সমস্ত নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক বর্ণনা অণুসারে হিজরতের তিন বছর পূর্বে নবী (সা) তায়েফ গমন করেছিলেন । সুতরাং এ সূরা যে নবুওয়াতের ১০ম বছরে শেষ দিকে অথবা ১১ শ বছরের প্রথম দিকে নাযিল হয়েছিলো তা নিরূপিত হয়ে যায় ।
ঐতিহাসিক পটভূমি
নবীর (সা) পবিত্র জীবনে নবওয়াতের ১০ম বছর ছিল অত্যন্ত কঠিন বছর । তিন বছর ধরে কুরাইশদের সবগুলো গোত্র মিলে বনী হাশেম এবং মুসলমানদের পুরোপুরি বয়কট করে রেখেছিলো । নবী (সা) তাঁর খান্দানের লোকজন ও মুসলমানদের সাথে শে’বে আবি তালিব * মহল্লায় অবরুদ্ধ হয়ে ছিলেন । কুরাইশদের লোকজন এই মহল্লাটিকে সব দিক থেকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিলো । এ অবরোধ ডিঙিয়ে কোন প্রকার রসদ ভেতরে যেতে পারতো না । শুধু হজ্জের মওসুমে এই অবরুদ্ধ লোকগুলো বের হয়ে কিছু কেনাকাটা করতে পারতো । কিন্তু আবু লাহাব যখনই তাদের মধ্যে কাউকে বাজারের দিকে বা কোন বাণিজ্য কাফেলার দিকে যেতে দেখতো চিৎকার করে বণিকদের বলতো, ‘এরা যে জিনিস কিনতে চাইবে তার মূল্য এত অধিক চাইবে যেন এরা খরিদ করতে না পারে । আমি ঐ জিনিস তোমাদের নিকট থেকে কিনে নেব এবং তোমাদের লোকসান হতে দেব না । একাধারে তিন বছরের এই বয়কট মুসলমান ও বনী হাশেমদের কোমর ভেঙে দিয়েছিলো । তাদেরকে এমন সব কঠিন সময় পাড়ি দিতে হয়েছিলো যখন কোন কোন সময় ঘাস এবং গাছের পাত খাওয়ার মত পরিস্থিতি এসে যেতো ।
* শে’বে আবি তালিব মক্কার একটি মহল্লার নাম । এখানে বনী হাশেম গোত্রের লোকজন বসবাস করতেন । আরবী ভাষায় ——–শব্দের অর্থ উপত্যকা বা পাহাড়ের মধ্যবর্তী ক্ষুদ্র বাস যোগ্য ভূমি । মহল্লাটি যেহেতু ‘আবু কুরাইস ’ পাহাড়ের একটি উপত্যকায় অবস্থিত ছিল এবং আবু তালিব ছিলেন বনী হাশেমদের নেতা । তাই এটিকে শে’বে আবি তালিব বলা হতো। পবিত্র মক্কার যে স্থানটি বর্তমানে স্থানীয়দের বর্ণনানুসারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্ম স্থান হিসেবে পরিচিত তার সন্নিকটেই এই উপত্যকা অবস্থিত ছিল । বর্তমানে একে শে’বে আলী বা শে’বে বনী হাশেম বলা হয়ে থাকে ।
অনেক কষ্টের পর এ বছরই সবেমাত্র এই অবরোধ ভেঙ্গেছিলো । নবী (সা) চাচা আবু তালিব, যিনি দশ বছর ধরে তাঁর জন্য ঢাল স্বরূপ ছিলেন ঠিক এই সময় ইন্তেকাল করেন । এই দুর্ঘটনার পর এক মাস যেতে না যেতেই তাঁর জীবন সঙ্গিনী হযরত খাদীজাও ইন্তেকাল করেন যিনি নবুওয়াত জীবনের শুরু থেকে ঐ সময় পর্যন্ত নবীর (সা) জন্য প্রশান্তি ও সান্তনার কারণ হয়ে ছিলেন । একের পর এক এসব দুঃখ কষ্ট আসার কারণে নবী (সা) এ বছরটিকে (আরবী) “আমুল হুযন” বা দুঃখ বেদনার বছর বলে উল্লেখ করতেন ।
হযরত খাদীজা ও আবু তালিবের মৃত্যুরপর মক্কার কাফেররা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধে আরো অধিক সাহসী হয়ে উঠলো এবং তাঁকে আগের চেয়ে বেশী উত্যক্ত করতে শুরু করলো । এমন কি তাঁর জন্য বাড়ীর বাইরে বের হওয়াও কঠিন হয়ে উঠলো । ইবনে হিশাম সেই সময়ের একটি ঘটনা এভাবে বর্ণনা করেছেন যে, একদিন কুরাইশদের এক বখাটে লোক জনসমক্ষে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাথায় ধূলা নিক্ষেপ করে ।
অবশেষে তিনি তায়েফে গমন করলেন । উদ্দেশ্য সেখানে বনী সাকীফ গোত্রকে ইসলামের দাওয়াত দেবেন । যদি তারা ইসলাম গ্রহণ না করে তাহলে অন্তত এ মর্মে তাদের সম্মত করাবেন যেন তাঁকে তাদের কাছে শান্তিতে থেকে তারা ইসলামের কাজ করার সুযোগ দেবে । সেই সময় তাঁর কাছে কোন সওয়ারীর জন্তু পর্যন্ত ছিল না । মক্কা থেকে তায়েফ পর্যন্ত গোটা পথ তিনি পায়ে হেঁটে অতিক্রম করলেন । কোন কোন বর্ণনা অনুসারে তিনি একাই তায়েফ গিয়েছিলেন এবং কোন কোন বর্ণনা অনুসারে শুধু যায়েদ ইবনে হারেস তাঁর সাথে ছিলেন । সেখানে পৌঁছার পর তিনি কয়েক দিন সেখানে অবস্থান করলেন এবং সাকীফের নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের প্রত্যেকের কাছে গিয়ে আলাপ করলেন । কিন্তু তারা তাঁর কোন কথা যে মানলো না শুধু তাই নয়, বরং স্পষ্ট ভাষায় তাদের শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার হুকুম শুনিয়ে দিল । কেননা তারা শংকিত হয়ে পড়েছিলো তাঁর প্রচার তাদের যুবক শ্রেণীকে বিগড়ে না দেয় । সুতরাং বাধ্য হয়েই তাঁকে তায়েফ ত্যাগ করতে হলো । তিনি তায়েফ ত্যাগ করার সময় সাকীফ গোত্রের নেতারা তাদের বখাটে ও পাণ্ডাদের তাঁর বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিল । তারা পথের দুই পাশ দিয়ে বহুদূর পর্যন্ত তাঁর প্রতি বিদ্রূপবাণ নিক্ষেপ, গালিবর্ষণ এবং পাথর ছুঁড়ে মারতে মারতে অগ্রসর হতে থাকলো । শেষ পর্যন্ত তিনি আহত হয়ে অবসন্ন হয়ে পড়লেন এবং তাঁর জুতা রক্তে ভরে গেলো । এ অবস্থায় তিনি তায়েফের বাইরে একটি বাগানের প্রাচীরের ছায়ায় বসে পড়লেন এবং আল্লাহর কাছে এই বলে ফরিয়াদ করলেনঃ
হে আল্লাহ! আমি শুধু তোমার কাছে আমার অসহায়ত্ব ও অক্ষমতা এবং মানুষের দৃষ্টিতে নিজের অমর্যাদা ও মূল্যহীনতার অভিযোগ করছি । হে সর্বাধিক দয়ালু ও করুণাময়! তুমি সকল দুর্বলদের রব । আমার রবও তুমিই । তুমি আমাকে কার হাতে ছেড়ে দিচ্ছ? এমন কোন অপরিচিতের হাতে কি যে আমার সাথে কঠোর আচরণ করবে? কিংবা এমন কোন দুশমনের হাতে কি যে আমার বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করবে? তুমি যদি আমার প্রতি অসন্তুষ্ট না হও তাহলে আমি কোন বিপদের পারোয়া করি না । তবে তোমার নিরাপত্তা ও কল্যাণ লাভ করলে সেটা হবে আমার জন্য অনেক বেশী প্রশস্ততা । আমি আশ্রয় চাই তোমার সত্তার সেই নূরের যা অন্ধকারকে আলোচিত এবং দুনিয়া ও আখেরাতের ব্যাপারসমূহের পরিশুদ্ধ করে । তোমার গযব যেন আমার ওপর নাযিল না হয় তা থেকে তুমি আমাকে রক্ষা করো এবং আমি যেন তোমার ক্রোধ ও তিরস্কারের যোগ্য না হই । তোমার মর্জিতেই আমি সন্তুষ্ট যেন তুমি আমার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যাও । তুমি ছাড়া আর কোন জোর বা শক্তি নেই । ” (ইবনে হিশাম, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৬২)
ভগ্ন হৃদয় ও দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ফিরে যাওয়ার পথে যখন তিনি “কারনুল মানাযিল” নামক স্থানের নিকটবর্তী হলেন তখন মাথার ওপর মেঘের ছায়ার মত অনুভব করলেন । দৃষ্টি তুলে চেয়ে দেখলেন জিবরাঈল আলাইহিস সালাম সামনেই হাজির । জিবরাঈল ডেকে বললেনঃ “আপনার কওম আপনাকে যে জবাব দিয়েছে আল্লাহ তা শুনেছেন । এই তো আল্লাহ পাহাড়ের ব্যবস্থাপক ফেরেশতাকে পাঠিয়েছেন । আপনি যা ইচ্ছা তাকে নির্দেশ দিতে পারেন । ” এরপর পাহাড়ের ব্যবস্থাপক ফেরেশতা তাঁকে সালাম দিয়ে আরজ করলেনঃ আপনি যদি আদেশ দেন তাহলে দুই দিকের পাহাড় এই সব লোকদের ওপর চাপিয়ে দেই । ” তিনি বললেনঃ না, আমি আশা করি আল্লাহ তাদের বংশ এমন সব লোক সৃষ্টি করবেন যারা এক ও লা-শরীক আল্লাহর দাসত্ব করবে । ” (বুখারী, বাদউল খালক, যিকরুল মালাইকা, মুসলিম, কিতাবুল মাগাযী, নাসায়ী, আলবু’য়স) ।
এরপর তিনি নাখালা নামক স্থানে গিয়ে কয়েক দিনের জন্য অবস্থান করলেন । এখন কিভাবে মক্কায় ফিরে যাবেন সে কথা ভাবছিলেন ।
তায়েফে যা কিছু ঘটেছে সে খবর হয়তো সেখানে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে । এখন তো কাফেররা আগের চেয়েও দুঃসাহসী হয়ে উঠবে । এই সময়ে একদিন রাতের বেলা যখন তিনি নামাযে কুরআন মজীদ তিলাওয়াত করছিলেন সেই সময় জিনদের একটি দল সেখানে এসে হাজির হলো । তারা কুরআন শুনলো, তার প্রতি ঈমান আনলো এবং ফিরে গিয়ে নিজ জাতির মধ্যে ইসলামের প্রচার শুরু করলো । আল্লাহ তাঁর নবীকে এই সুসংবাদ দান করলেন যে, আপনার দাওয়াত শুনে মানুষ যদিও দূরে সরে যাচ্ছে, কিন্তু বহু জিন তার ভক্ত অনুরক্ত হয়ে পড়েছে এবং তারা একে স্বজাতির মধ্যে প্রচার করছে ।
আলোচ্য বিষয় ও মূল বক্তব্য
এই পরিস্থিতিতে সূরাটি নাযিল হয় । যে ব্যক্তি একদিকে নাযিল হওয়ার এই পরিস্থিতি সামেন রাখবে এবং অন্য দিকে গভীর মনোনিবেশ সহকারে সূরাটি পড়বে তার মনে এ বিষয়ে আর কোন সন্দেহ থাকবে না যে এটি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী নয় । বরং “এটি মহাপরাক্রমশালী ও মহাজ্ঞানী আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত । ” কেননা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত গোটা সূরার মধ্যে কোথাও সেই ধরনের মানবিক আবেগ ও প্রতিক্রিয়ার সামান্য লেশ মাত্র নেই যা সাধারণত এরূপ পরিস্থিতির শিকার মানুষের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই সৃষ্টি হয় । এটা যদি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী হতো যাকে একের পর এক বড় বড় দুঃখ বেদনা ও মুসিবত এবং তায়েফের সাম্প্রতিক আগাত দুর্দশার চরমে পৌঁছিয়ে দিয়েছিলো-তাহলে এই পরিস্থিতির কারণে তাঁর মনের যে অবস্থা ছিল সূরার মধ্যে কোথাও না কোথাও তার চিত্র দৃষ্টিগোচর হতো । উপরের আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যে দোয়া উদ্বৃত করেছি তার প্রতি একটু লক্ষ্য করুন । সেটা তাঁর নিজের বাণী । ঐ বাণীর প্রতিটি শব্দ সেই পরিস্থিতিরই চিত্রায়ন । কিন্তু এই সূরাটি সেই একই সময়ে একই পরিস্থিতিতে তাঁরই মুখ থেকে বেরিয়েছে, অথচ সেই পরিস্থিতি জনিত প্রভাব থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত ।
কাফেররা বহুবিধ গোমরাহীর মধ্যে শুধু ডুবেই ছিল না বরং প্রচণ্ড জিদ, গর্ব ও অহংকারের সাথে তা আঁকড়ে ধরে ছিল । আর যে ব্যক্তি এসব গোমরাহী থেকে তাদেরকে উদ্ধার করতে সচেষ্ট ছিল তাকে তারা তিরস্কার ও সমালোচনার লক্ষ্য বানিয়ে নিয়েছিলো । এই সব গোমরাহীর ফলাফল সম্পর্কে কাফেরদের সাবধান করাই সূরার মূল আলোচ্য বিষয় । তাদের কাছে দুনিয়াটা ছিল একটা উদ্দেশ্যহীন খেলার বস্তু । তারা এখানে নিজেদেরকে দায়িত্বহীন সৃষ্টি মনে করতো । তাদের মতে তাওহীদের দাওয়াত ছিল মিথ্যা তাদের উপাস্য আল্লাহর অংশীদার, তাদের এ দাবীর ব্যাপারে তারা ছিল একগুঁয়ে ও আপোষহীন । কুরআন আল্লাহর বাণী একথা মানতে তারা মোটেই প্রস্তুত ছিল না । রিসালাত সম্পর্কে তাদের মন-মগজে ছিল একটি অদ্ভুত জাহেলী ধারণা এবং সেই ধারণার ভিত্তিতে তারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রিসালাতের দাবী পরখ করার জন্য নানা ধরনের অদ্ভুত মানদণ্ড পেশ করছিলো । তাদের মতে ইসলামের সত্য না হওয়ার সবচেয়ে বড় প্রমাণ ছিল এই যে, তাদের নেতৃবৃন্দ, বড় বড় গোত্রীয় সর্দার এবং তাদের কওমের গবুচন্দ্ররা তা মেনে নিচ্ছিলো না এবং শুধু কতিপয় যুবক, কিছু সংখ্যক দরিদ্র লোক এবং কতিপয় ক্রীতদাস তার ওপর ঈমান এনেছিলো । তারা কিয়মাত, মৃত্যুর পরের জীবন এবং শাস্তি ও পুরস্কারের বিষয়কে মনগড়া কাহিনী বলে মনে করতো তাদের ধারণা ছিল, বাস্তবে এসব ঘটা একেবারেই অসম্ভব ।
এ সূরায় এসব গোমরাহীর প্রত্যেকটিকে সংক্ষেপে যুক্তি-প্রমাণসহ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে এবং কাফেরদের এই বলে সাবধান করা হয়েছে যে, তোমরা বিবেক-বুদ্ধি ও যুক্তি-প্রমাণের সাহায্য সত্য ও বাস্তবতা বুঝার চেষ্টা করার পরিবর্তে যদি গোড়ামি ও হঠকারিতার মাধ্যমে কুরআনের দাওয়াত ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রিসালাতকে প্রত্যাখ্যান করো তাহলে নিজেদের ভবিষ্যত নিজেরাই ধ্বংস করবে ।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-